আমরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল বা দোয়ার মাহলে ওয়াজ শুনি, কিন্তু আমরা ক'জন যানি ওয়াজ করা ও শুনার কিছু সুন্নাত রয়েছে, আজকে আমরা ওয়াজ করা এবং শ্রবন করার সুন্নাত সমুহু নিয়ে আলোচনা করব,
বয়ান ও ওয়াজের সুন্নত সমুহু |
ওয়াজ ও বয়ান করার সুন্নাত
১. রাসুল সা. বয়ানের শুরু আল্লাজ পাকের হামদ, ছানা করতঃ কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করতেন এবং বলতেন, কালেমায়ে শাহাদাত ছাড়া বয়ান হাত কাটা মানুষ সাদৃশ্য। আর কুরআনের আয়াত পাঠ করতেন।
২. রাসুল সা. বয়ানের আল্লাহ পাকের বড়ত্ব, আল্লাহ পাকের নেয়ামত, খোদাভীতি, বেহশত-দোযখ, কিয়ামত সম্পর্কে আলোচনা থাকতো।
৩. রাসুল সা. সর্বদা বিশেষ করে বয়ানে ছয়টি বিষয় থেকে নিজেকে সম্পূর্ণরূপে মুক্ত রেখেছিলেন-
১) রিয়া তথা লোক দেখানো মনোভাব থেকে।
২) বেশি কথা বলা থেকে।
৩) অর্থহীন বিষয়াদির মধ্যে জড়িত হওয়া থেকে।
৪) কারো নিন্দােকরা থেকে।
৫) সন্বোধিত বা অন্য কাউকে অবমাননা বা লজ্জা দেয়া থেকে।
৬) কারও ছিদ্রান্বেষণ ও ভুল-ভ্রান্তি সম্প্রচার করা থেকে।
৪. রাসুল সা. পরিস্কারভাবে বয়ান করতেন যা শ্রোতা সহজেই বুঝতে পারতো। আম্মাজান আয়েশা রাযি. বলেন, কেউ তার শব্দাবলী গণনা করতে চাইলে অনায়েসে তা গণনা করতে পারতো।
বয়ান ও ওয়াজের সুন্নত সমুহু |
৫. রাসুল সা. এত দীর্ঘ কথা বলতেন না যে শ্রোতা বিরক্তি বোধ করত।
৬. আবার এমন দুর্বোধ্য ধরণের সংক্ষেপও করতেন না যে বয়ান অসম্পূর্ণ থাকতো।
৭. রাসুল সা. নিষ্ঠুর ও কঠোরভাসী ছিলেন না, বরং মধুরভাষী ছিলেন।
৮. রাসুল সা. এর চিৎকার করে কথা বলার ও অশোভন উক্তি করার অভ্যাস ছিল না।
৯. রাসুল সা. বয়ানের সময় কখনও ডান দিকে আবার কখনও বাম দিকে ঘুরে ঘুরে তাকাতেন।
১০. রাসুল সা. সকলের মনোযোগের প্রতি লক্ষ্য রাখতেন। অনেক সময় আলাদা আলাদাভাবে সম্বোধন করতেন। ফলে প্রত্যেকেই মনে করত যে, রাসিল সা. তার প্রতিই সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দান করেছেন।
.......................................................................................................................................................................................
.......................................................................................................................................................................................
মহিলাদের নামাযের পার্থক্য
মেসওয়াক ও ওযুর সুন্নাত তরিকা
মেসওয়াক ও ওযুর সুন্নাত তরিকা
.......................................................................................................................................................................................
১১. রাসুল সা. গুরুত্বপীর্ণ কথাগুলো তিন তিনবার বলতেন।
১২. রাসুল সা. যে বিষয়ে অত্যাধিক জোর দিতে চাইতেন, সেখানে এ বলে কসম খাইতেস- "সে সত্তার কসম! যার হাতে আমার জান"।
১৩. রাসুল সা. ইশারা করলে পূর্ণ হাতে ইশারা করতেন।
১৪. রাসুল সা. বয়ানকালে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের আলোচনায় হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলকে বাম হাতের তালুতে মারতেন।
বয়ান ও ওয়াজ শুনার সুন্নত
------------------------------ ---------------------
১. সাহাবায়ে কেরাম রাযি. খুব দৃঢ়তার সাথে বয়ান শুনতেন।
২. খুব ধ্যা-খেয়ালের সাথে অর্থাৎ দিলের কানে শুনতেন।
৩. সঙ্গে সঙ্গে আমলেরও পাক্কা নিয়ত করে ফেলতেন।
৪. সাহাবায়ে কেরাম রাসুল সা. উম্মত হিসেবে অপরের নিকট পৌঁছানোর নিয়ত করে শুনতেন।
৫. রাসুল সা. এর সামনে সাহাবায়ে কেরাম রাযি. আদবের সঙ্গে সুন্নত তরিকায় বসতেন।
৬. মুজাহাদার সাথে বসতেন অর্থাৎ হাজারও জরুরত থাকা সত্ত্বেও বসে বসে বয়ান শুনতেন।
-মাহমুদ আব্দুল্লাহ
আরো পড়ুন-
আল্লামা শামসুল হক ফরিদপুরী যেভাবে বাংলা সাহিত্যে ছাত্রদের আগ্রহী করতেন
ফেসবুকে আমি
0 Comments